ইয়োব 39

1 “পাহাড়ী ছাগল কখন বাচ্চা দেয় তা কি তুমি জান?

হরিণীর বাচ্চা দেওয়া কি কখনও তুমি দেখেছ?

2 তাদের বাচ্চা গর্ভে কতদিন থাকে তা কি তুমি গুণেছ?

তাদের জন্ম দেবার সময় কি তুমি জান?

3 তারা নীচু হয়ে বাচ্চা দেয়

আর তাদের প্রসবের যন্ত্রণা শেষ হয়ে যায়।

4 তাদের বাচ্চারা বড় হয় আর মাঠে শক্তিশালী হয়ে ওঠে;

তারা মায়ের কাছ থেকে চলে যায়, আর ফিরে আসে না।

5 “বুনো গাধাকে কে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দিয়েছে?

কে তার দড়ির বাঁধন খুলে দিয়েছে?

6 তার ঘরের জন্য আমি মরু-এলাকা দিয়েছি,

তার বাসস্থানের জন্য দিয়েছি নোনা জায়গা।

7 সে শহরের গোলমাল ঘৃণা করে,

চালকের চিৎকার তার কানে আসে না।

8 তার চরবার জায়গা হল পাহাড়ী এলাকা;

সে সেখানে সব রকম সবুজ গাছপালার খোঁজ করে।

9 “বুনো ষাঁড় কি তোমার কাজ করতে রাজী হবে?

রাতে সে কি তোমার যাবপাত্রের কাছে থাকবে?

10 চাষের জমিতে কি তুমি তাকে জোয়ালের দড়ি দিয়ে বাঁধতে পারবে?

সে কি তোমার জন্য উপত্যকায় চাষ করবে?

11 তার ভীষণ শক্তির জন্য কি তার উপর তুমি নির্ভর করবে?

তোমার ভারী কাজ কি তুমি তাকে করতে দেবে?

12 সে যে তোমার ফসল ঘরে এনে খামারে জমা করবে

সেই বিশ্বাস কি তুমি তার উপর করতে পারবে?

13 “উটপাখী জোরে জোরে ডানা ঝাপ্‌টায়,

কিন্তু সারস পাখীর ডানা ও পালখের সংগে তার তুলনা হয় না।

14 উটপাখী মাটিতে ডিম পাড়ে

আর বালিতে তা গরম হতে দেয়;

15 তার মনেও থাকে না যে, তা পায়ে গুঁড়িয়ে যেতে পারে

কিম্বা কোন বুনো পশু তা পায়ে মাড়াতে পারে।

16 তার বাচ্চাদের সংগে সে নিষ্ঠুর ব্যবহার করে,

যেন সেগুলো তার নয়;

সে চিন্তাও করে না যে,

তার সমস পরিশ্রম বিফল হতে পারে,

17 কারণ ঈশ্বর তাকে জ্ঞান দেন নি

কিম্বা বুঝবার শক্তিও দেন নি।

18 তবুও সে যখন পাখা ঝাপ্‌টায়

তখন ঘোড়া ও তার সওয়ারকে সে হেসে উড়িয়ে দেয়।

19 “ঘোড়াকে কি তুমি শক্তি দিয়েছ?

তার ঘাড়ে কি সুন্দর কেশর দিয়েছ?

20 পংগপালের মত করে তুমি কি তাকে লাফ দেওয়াতে পেরেছ?

তার নাকের গর্ব-ভরা শব্দ ভীষণ ভয় জাগায়।

21 সে জোরে জোরে পা ঘষে নিজের শক্তিতে আমোদ করে

আর যুদ্ধের সময় আক্রমণ করতে যায়।

22 সে ভয়কে দেখে হাসে, কিছুতেই ভয় পায় না;

তলোয়ারের সামনে থেকে সে সরে যায় না।

23 তার দেহের পাশে তীর রাখবার তূণ শব্দ করে ওঠে,

আর ঝক্‌মক্‌ করে ওঠে বর্শা ও বল্লম।

24 সে উত্তেজনায় কাঁপতে কাঁপতে দৌড়ে যায়;

তূরী বাজলে সে আর স্থির থাকতে পারে না।

25 তূরীর আওয়াজের সংগে সংগে সে নাক দিয়ে শব্দ করে;

সে দূর থেকে যুদ্ধের গন্ধ পায়

আর সেনাপতিদের চিৎকার ও যুদ্ধের হাঁক শোনে।

26 “তোমার বুদ্ধিতেই কি বাজপাখী ওড়ে

আর দক্ষিণ দিকে যাওয়ার জন্য ডানা মেলে দেয়?

27 তোমার আদেশেই কি ঈগল পাখী উঁচুতে ওড়ে

আর উঁচু জায়গায় নিজের বাসা বাঁধে?

28 সে খাড়া পাহাড়ের উপরে বাস করে,

আর রাতে তার চূড়ায় থাকে;

সেই চূড়াই তার দুর্গ।

29 সেখানে থেকে সে খাবারের খোঁজ করে;

তার চোখ দূর থেকে তার শিকার দেখতে পায়।

30 তার বাচ্চারা পেট ভরে রক্ত খায়;

যেখানে মরা থাকে সেখানে তাকে দেখা যায়।”