ইয়োব 3

ইয়োবের বিলাপ

1-2 তারপর ইয়োব কথা বলতে আরম্ভ করে তাঁর জন্মের দিনটাকে অভিশাপ দিয়ে বললেন,

3 “আমার জন্মের দিনটা ধ্বংস হয়ে যাক,

সেই রাতটা ধ্বংস হয়ে যাক

যখন বলা হয়েছিল, ‘ছেলে হয়েছে।’

4 সেই দিনটা অন্ধকার হয়ে যাক;

উপর থেকে ঈশ্বর যেন সেই দিনটার খবর না নেন;

তার উপর কোন আলো না পড়ুক।

5 অন্ধকার আর ঘন ছায়া সেই দিনটাকে অধিকার করে নিক;

মেঘ তাকে ঢেকে ফেলুক,

আর গাঢ় অন্ধকার তাকে ভীষণ ভয় দেখাক।

6 ঘন অন্ধকার সেই রাতটাকে ধরে ফেলুক;

বছরের দিনগুলোর মধ্যে ওটাকে গোণা না হোক,

কিম্বা কোন মাসের মধ্যেও ওটা না থাকুক।

7 সেই রাতটা বন্ধ্যা হোক,

কোন আনন্দের গান তার মধ্যে শোনা না যাক।

8 যারা দিনগুলো খারাপ হওয়ার জন্য মন্ত্র পড়ে

আর লিবিয়াথনকে জাগাতে পারে

তারা ঐ দিনটাকে অভিশাপ দিক।

9 তার ভোর রাতের সব তারা অন্ধকার হয়ে যাক;

সে আলোর জন্য মিথ্যাই বসে থাকুক;

সে যেন ভোরের প্রথম আলো দেখতে না পায়,

10 কারণ সে আমার মায়ের গর্ভের দরজা বন্ধ করে নি,

আমাকে কষ্ট থেকে দূরে রাখে নি।

11 “আমি কেন গর্ভে থাকতে মরি নি?

কেনই বা পেট থেকে পড়েই মরলাম না?

12 মায়ের কোল কেন আমাকে গ্রহণ করেছিল?

কেনই বা তাঁর বুকের দুধ তিনি আমাকে দিয়েছিলেন?

13 তা না হলে তো আমি এখন শান্তিতে শুয়ে থাকতে পারতাম,

আমি ঘুমাতাম আর বিশ্রাম পেতাম।

14 আমি সেই রাজাদের আর সেই মন্ত্রীদের সংগে থাকতাম

যাঁরা একদিন নিজেদের জন্য দালান গড়েছিলেন

যেগুলো আজ ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে।

15 আমি সেই শাসনকর্তাদের সংগে থাকতাম

যাঁদের প্রচুর সোনা ছিল,

যাঁরা রূপা দিয়ে ঘর-বাড়ী ভরে রাখতেন।

16 যে শিশু দিনের আলো দেখতে পায় নি,

কেন পেটে মরে-যাওয়া সেই শিশুর মত

আমাকে মাটির মধ্যে লুকিয়ে রাখা হল না?

17 সেখানে তো দুষ্ট লোকেরা হাংগামা করে না,

আর ক্লান্ত লোকেরা বিশ্রাম পায়।

18 বন্দীরা সবাই সেখানে আরাম ভোগ করে;

অত্যাচারীদের চিৎকার আর সেখানে শোনা যায় না।

19 ছোট ও বড় সবাই সেখানে আছে,

আর দাসেরা সেখানে মনিবের হাত থেকে মুক্ত।

20 “যারা দুঃখে আছে, কেন তাদের আলো দেখতে দেওয়া হয়

আর তেতো প্রাণকে দেওয়া হয় জীবন?

21 তারা মৃত্যু চায় কিন্তু তা পায় না,

যদিও তারা গুপ্তধনের চেয়েও বেশী করে তার খোঁজ করে।

22 তারা কবরে পৌঁছাতে পারলে আনন্দিত হয়,

আর তার জন্য তারা খুব আনন্দ করে।

23 যে মানুষের পথ তার কাছে গুপ্ত,

যাকে ঈশ্বর আট্‌কে রেখেছেন,

কেন সেই মানুষকে জীবন দেওয়া হয়?

24 আমার দীর্ঘনিঃশ্বাসই আমার খাবার হয়েছে,

আর আমার কাত্‌রানি জলের মত ঢেলে পড়ছে।

25 আমি যা ভয় করেছিলাম

তা-ই আমার উপর এসে পড়েছে;

যা হবে বলে আমার ভীষণ ভয় হয়েছিল

তা-ই আমার উপর ঘটেছে।

26 আমার শান্তি নেই, স্থিরতা নেই, কোন বিশ্রাম নেই,

আছে কেবল কষ্ট।”